ঢাকা, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতাকর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশের পক্ষ থেকে পল্টন, মতিঝিল ও শাহজাহানপুর থানায় এসব মামলা করা হয়।
তিন মামলায় তিন হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার বিকালে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, পল্টন মডেল থানার মামলায় সাড়ে চারশজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পুলিশের করা মামলাটিতে ৪৭৩ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও বিএনপির দেড় থেকে দুই হাজার নেতাকর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
পল্টন থানার মামলায় আসামি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানকে বুধবার সন্ধ্যার আগে-পরে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপির ৪৭৩ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দেড় থেকে দুই হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়েছে।’
মতিঝিল থানার মামলাটির বাদী উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম সিকদার। এই মামলায় মো. জামিল হোসাইন, মো. আনোয়ার হোসেন ও মো. হারুন অর রশিদসহ ২৯ জনের নামোল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে আরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের।
নয়াপল্টনে সংঘর্ষের সময় বুধবার বিকালে আটক ২০ জনকে এই গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শাহজাহানপুর থানার মামলাটির বাদী এসআই রফিকুল ইসলাম। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা এই মামলায় নমোল্লেখ করা হয়েছে ৫৫ জনের। এছাড়াও আসামি করা হয়েছে আরও ২০০/২৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে। শাহজাহানপুর থানার ওসি মনির হোসেন মোল্লা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাহজাহানপুর থানার মামলায় নামোল্লেখ করা আসামির মধ্যে আছেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, রাজধানীর হাতিরঝিল থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইবাদুল ব্যাপারী ও শাহজাহানপুর থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. এইচ কে হোসেন আলী।
বুধবার বিকাল ৩টার দিকে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর গুলি, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
বিকাল ৪টার পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সামনের সড়কে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। এসময় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা এ্যানি ও জুয়েলকে তুলে নিয়ে যান।
অন্যদিকে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালামসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
Leave a Reply